ডায়াবেটিস প্রতিরোধে নিয়মিত অভ্যেস করুন এই দুই যোগাসনঃ
বর্তমানে কমবেশি সকলের জীবনে ডায়াবেটিস বা মধুমেহ অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এর জন্য দায়ি আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা। বিশেষজ্ঞদের মতে ডায়াবেটিসের অন্যতম কারণ হল অতিরিক্ত ওজন। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে খাদ্যভ্যাস পরিবর্তনের সাথে করতে হবে নিয়মিত শরীর চর্চা অর্থাৎ নির্দিষ্ট কিছু যোগাসন। অর্ধ মৎস্যেন্দ্রাসন এবং চক্রাসন যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য। কারণ এই দুই আসনের নিয়মিত অভ্যেসে ওজন থাকে নিয়ন্ত্রণে। তেমনই শরীরে ইনসুলিন সঠিক ভাবে কাজ করতে পারে। এক নজরে দেখে নিন এই দুই আসন করার নিয়ম ও উপকারিতা।
অর্ধ মৎস্যেন্দ্রাসন করার নিয়ম ও উপকারিতা-
অর্ধ মৎস্যেন্দ্রাসন বা হাফ স্পাইনাল টুইস্ট করতে গেলে প্রথমে সামনের দিকে পা ছড়িয়ে শিরদাঁড়া সোজা করে বসুন। এবার ডান পা তুলে হাঁটুর কাছ থেকে ভেঙে বাঁ পায়ের উপর দিয়ে নিয়ে বাঁ উরুর বাঁ পাশে মাটিতে রাখুন। ডান পায়ের পাতা মাটির সঙ্গে লেগে থাকবে। এবার বাঁ হাত ডান হাঁটুর পাশ দিয়ে নিয়ে ডান পায়ের আঙুল অথবা বাঁ পায়ের হাঁটু শক্ত করে ধরুন এবং ডান হাত পেছনদিক দিয়ে ঘুরিয়ে নিয়ে বাঁ উরু ও তলপেটের সংযোগস্থলে রাখুন। এবার ডানদিকে শরীরটা মোচড় দিয়ে ঘাড় ও মাথা ডানদিকে বাঁকিয়ে ডান পিঠ দেখতে চেষ্টা করুন। এভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড এই অবস্থায় থাকুন। এরপর হাত-পা আলগা করে বসে বিশ্রাম নিন।
এভাবে নিয়মিত এই আসন চর্চা করলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। অর্থাৎ সুগার কনট্রোল করেতে ও বডির স্ট্রেস হরমোন নরমাল রাখতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করে। এর ফলে যে কোনো পরিস্থিতিতে শরীরে ইনসুলিনের ভারসাম্য বজায় থাকে। এছাড়াও ডায়াবেটিসের পাশাপাশি এটি কোষ্টকাঠিন্যের সমস্যা কমায়। যকৃতের যেকোনো সমস্যা দূর করে। মেরুদন্ডের দুপাশের পেশি ও স্নায়ুকেন্দ্রগুলোকে সতেজ ও সক্রিয় রাখে।
এবার জানুন চক্রাসন করার সঠিক নিয়ম ও উপকারিতার কথা-
চক্রাসন করার ক্ষেত্রে প্রথমে অর্ধ-চক্রাসনের ভঙ্গিমায় আসুন। এর পর হাতের তালুর সাহায্যে বডির উপরের অংশ তুলুন ও যতটা সম্ভব হাত দুটো দু’পায়ের গোড়ালির কাছে রাখুন বা হাতের সাহায্যে গোড়ালি ধরুন। এভাবেই ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড একই অবস্থায় থাকুন। এর পর আসতে আসতে মাথা মাটিতে ঠেকিয়ে চিৎ হয়ে শুয়ে কিছুক্ষন বিশ্রাম নিয়ে নিন।
এভাবে অর্ধ মৎস্যেন্দ্রাসনের পাশাপাশি এই আসন নিয়মিত করলে দেহের মধ্যভাগের অপ্রয়োজনীয় মেদ দূর হয়, ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। যার ফলে কমবে ডায়াবেটিসের মাত্রা। পাশাপাশি মেরুদণ্ড-সংলগ্ন স্নায়ুমণ্ডলী ও তার পাশের পেশি সতেজ ও সক্রিয় থাকবে। এছাড়াও হৃদপিন্ড ও ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ও নানান জটিল সমস্যা দূর হয়।
তবে এই আসন করলে বুকে চাপ পরে। সেই কারণে যাঁদের ইতিমধ্যে হার্ট ও ফুসফুসের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য এই আসন না করাই ভালো।
No comments:
Post a Comment